সহস্রধারা এবং গুলিয়াখালি

স্বল্প খরচে, অল্প শ্রমে ঘুরে আসুন অসাধারণ স্পট সহস্রধারা এবং গুলিয়াখালি থেকে (বর্ননা, দিকনির্দেশনা, খরচ, সাবধানতা)

র্না, পাহাড়, সৈকত এর জন্য সারা বাংলাদেশেই সিতাকুন্ড এলাকার জনপ্রিয়তা অত্যধিক। এই অঞ্চলের অনেক গুলো ট্যুরিস্ট স্পটের মধ্যে তুলনামূলক সবচেয়ে কম কষ্ট এবং কম সময় লাগবে সহস্রধারা এবং গুলিয়াখালি ঘুরতে। এক দিনেই ঘুরে আসা যাবে (ডে ট্যুর)। প্লেস গুলাও এককাথায় জোশ। ভাল খাবার খাওয়ার পর যেমন মুখে স্বাদ লেগে থাকে বারবার খেতে ইচ্ছে করে এই প্লেস ২টাও তেমনই।
চলুন আসল আলোচনায় আসি,

সহস্রধারাঃ

=> এখানে যাওয়ার পথে রয়েছে অনেক গুলো পুরোনো মন্দির।
=> আছে ৪৭ ফিট গভির স্বচ্ছ পানির লেক।
=> লেকের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাসন প্রকল্প।
=> এবং সবশেষে প্রধান আকর্ষণ সহস্রধারা ঝর্না।
যাওয়ার সময় লেকের পাশের দোকানে জামা কাপড় রেখে যাবেন। মাঝির নাম্বারটা নিয়ে রাখবেন এরপরে ঝর্নায় যতক্ষন থাকেন আপনার ইচ্ছা। আসার সময় মাঝিরে কল দিলেই সে চলে আসবে।

কীভাবে যাবেন?

(সকাল ৭ টায়) ফেনী থেকে বাসে করে ছোট দারোগার হাট – জনপ্রতি ভাড়া ৪০ টাকা (ঢাকা থেকে ফেনী এসে অথবা ঢাকা – চট্রগ্রামের টিকেটেও ছোট দারোগার হাট নামা যাবে)
ছোট দারোগার হাট থেকে সিএনজিতে সহস্রধারার ভেতর – জনপ্রতি ভাড়া ১৫-২০ টাকা
সিএনজি থেকে নেমে ১৫ মিনিটের পাহাড়ি পথ হাটলেই মিলে যাবে সহস্রধারা।
সেখানে গিয়ে জনপ্রতি ২০ টাকা দিয়ে বোটে করে লেক পেরিয়ে ঝর্নায় চলে যেতে পারবেন।

সাবধানতাঃ

=> ঝর্নার উপর থেকে বানররা পাথর ফেলে। সুতরাং, সাবধানে থাকবেন একটা পড়লেই কেল্লাফতে।
=> কিছুদিন আগে লেকে নামা নিষিদ্ধ করা হয়েছে কারন এইটা অনেক গভীর এবং পানি ভারি। আমি নেমেছিলাম আগের বার। সাতার কাটতে অসম্ভব কষ্ট হয়েছিল। (কয়েকজন মারাও গিয়েছে এই লেকে)

গুলিয়াখালিঃ

গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকতের ঘাসের কারপেটের মত ভূমি সকলেরই মন টেনে নিবে। ফটোশুটের জন্য এই প্লেসটা এককথায় অস্থির। এখানে অনায়াসেই একটা লম্বা ঘুম দেয়া যাবে। যাহোক, ঘাসের কারপেট পেরিয়ে সামনে গেলেই বিচ পাওয়া যাবে। এখান থেকে ভিউ টা অসাধারণ। সামনেই বিশাল সাগর। একটা ফুটবল নিয়ে গেলে বিচে খেলতে পারবেন।

কীভাবে যাবেন?

সহস্রধারা ঘুরে আবার ছোট দারোগার হাট আসবেন (চেষ্টা করবেন ১২ টার আগে আসার)
ছোট দারোগার হাট থেকে লেগুনায় জনপ্রতি ১০ টাকা করে সিতাকুন্ড বাজার।
সিতাকুন্ড বাজারের রাস্তার নিচে নেমে প্রথমে দুপুরের খাবার খেয়ে নিবেন (ব্রয়লার মুরগি ৭০)
দুপুরের খাবার শেষে সিএনজিতে জনপ্রতি ২০ টাকা করে চলে যান গুলিয়াখালি।
সিএনজি থেকে নেমে একটু হাটলেই একটি বাশের ব্রিজ পাবেন সেখানে জনপ্রতি ১০ টাকা দিতে হয় (৮/১০ জনের গ্রুপ হলে একটু বুঝিয়ে ৪০/৫০ দিলেও হবে)
এরপর আরেকটু গেলেই প্রকৃতির অসাধারণ সৌন্দর্য দেখতে পাবেন।

সাবধানতাঃ

* বিচে যাওয়ার পথ অনেক পিচ্ছিল। ধীরে হাটবেন।
* সাগরের কাছাকাছি চোরাবালি আছে। বেশি গভির না জাস্ট হাটু অবদি।
* সাগরে না নামাই ভাল। আমাদের সাথের অন্য গ্রুপের একজনকে পানিতে অজানা কিছু একটা কামড় দিয়েছিল।
(উল্লেখ্য, ফেরার সময় সিতাকুন্ড বাজার থেকে বাসে ৫০ টাকা অথবা ট্রেনে ফেনী চলে আসতে পারবেন)

বিঃদ্রঃ প্রকৃতি আমাদের শ্রেষ্ঠ বন্ধু। বই পুস্তকে কিংবা পরিক্ষার খাতায় নয় আমাদের বাস্তবে এই বন্ধুত্ব রক্ষা করতে হবে। প্রকৃতি ধ্বংস হলে আমরাও ধ্বংস হব। তাই আপনাদের পায়ে পড়ে, হাতে ধরে অনুরোধ করবো দয়া করে যেখানে যেই স্পটেই ঘুরতে যান সেখানে ময়লা ফেলবেন না। নিজের আশেপাশেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে রক্ষা করুন!!!
ধন্যবাদ 😘
ভ্রমন বিস্তারিতঃ মিনহাজ উদ্দিন মাহমুদ