বাড়ির কাছে জিন্দা পার্ক

জিন্দা পার্ক, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

ভোরের হিমেল হাওয়ায় গাছেরা নিঃশব্দে মনের সুখে উড়ছে। পাখিদের কিচিরমিচির গুঞ্জনে মিশে একাকার। ভোরের লাল রঙা সূর্য ধীরে ধীরে সোনালী আকারে বেড়ে উঠছে। বলছি জিন্দা পার্কের কথা।

রূপগঞ্জের জিন্দা গ্রামের পাঁচ তরুণ কিশোর এক যুগ আগে জিন্দা গ্রামকে আদর্শ গ্রাম হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষে অপস নামে এক সেবামূলক সামাজিক সমিতি চালু করে। তাদের সেই স্বপ্ন আজ সত্যি হয়েছে। জিন্দা আজ রূপগঞ্জের মডেল গ্রাম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

পার্কটি ১৫০ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। পার্কটিতে ২৫০ প্রজাতির ১০ হাজারেরও বেশি গাছপালা আছে। গাছের এই সমারোহ পরিবেশকে করেছে পুরো শান্তিময়। কিছু গাছের উপর মানুষের তৈরি ছোট ছোট ঘর গুলো আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে এই পার্কটিকে।

টিলা আর লেক বেষ্টিত এ পার্কের ভেতরে ভেতরে আছে দ্বি- পুকুর। লেকে নৌকা ভ্রমনের অপার সুযোগ রয়েছে। পার্কের ঢুকার একটু পরই হাতের বাম পাশে একটি বিশাল খেলার মাঠ সহ একটি বিদ্যালয় রয়েছে। আর ডান পাশে একটি দোকান রয়েছে। যেখানে হাতের তৈরি অনেক শিল্প দেখতে পাবেন।

এছাড়াও নামাজের জন্য একটি সুসজ্জিত জানালা বিহীন মসজিদ রয়েছে। বই পরার জন্য আছে বিশাল আকারের একটি লাইব্রেরীও। সুলভ মূল্যে দুপুরের খাবারের জন্য একটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থা আছে। কাঠের তৈরি ভাসমান ব্রিজ ও ছোট ছোট লেক রয়েছে।

ফ্যামিলি পিকনিকের জন্য জিন্দা পার্ক এখন বেশ পরিচিত জায়গা। লেকের পাড়ে ফুলের বাগানে নিরিবিলি চুটিয়ে আড্ডা দেবার মত জায়গা রয়েছে। পুরো পার্কে পুকুর লেক ছাড়া রয়েছে ঘন সবুজ অরণ্যে ঘেরা ছোট বড় টিলা। প্রিয়জনের সাথে চা পানের জন্য দিঘির মাঝামাঝি একটি টি রুম রয়েছে।

রাতে থাকার জন্য মহুয়া নামের একটি গেস্ট হাউজ রয়েছে। তবে ভাড়া কতো পড়বে তা আসলে জানার মত প্রয়োজন হয়নি। যাদের রাতে থাকার ইচ্ছে থাকবে তারা টিকেট কাটার সময় কথা বলে নিলেই উত্তম হবে।

কিভাবে যাবেনঃ যেকোনো স্থান থেকে ঢাকায় আসতে হবে। এরপর সিএনজি অথবা লোকাল বাসে করে করে কুড়িল বিশ্বরোড। কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে বিআরটিসি বাসে করে কাঞ্চন ব্রিজ। ভাড়া- ২৫ টাকা। কাঞ্চন থেকে অটো করে জিন্দা পার্ক। লোকাল ভাড়া জন প্রতি ৩০ টাকা। যদি কেউ রিজার্ভ নিতে চান তবে সে ক্ষেত্রে দামাদামি করে উঠবেন। জিন্দা পার্ক থেকে আসার সময় লোকাল অটো পাওয়া খুবই দুস্কর। সেই ক্ষেত্রে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা নিয়ে কাঞ্চন ব্রিজ আসা লাগবে। কাঞ্চন ব্রিজেও বিআরটিসির কাউন্টার রয়েছে। কিছুক্ষন পরপরই বাস আসে। বাসে উঠেই কুড়িল বিশ্বরোড। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে নিজের গন্তব্যস্থলে।

পার্কের প্রবেশ ফি- ১০০ টাকা।
খাবার সাথে করে নিয়ে ঢুকলে বাড়তি ২৫ টাকা বেশি দিতে হবে।
লাইব্রেরীর প্রবেশ মূল্য- ১০ টাকা।

বিঃ দ্রঃ যেখানে সেখানে পানির বোতল, চিপসের প্যাকেট এবং পলিথিন ফেলবেন না। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।