সোনাদিয়া দীপ যেতে চান ?

সোনাদিয়া দীপ যেতে চান ?

আমার দেখা এখন পর্যন্ত সবথেকে সুন্দর দ্বীপ “সোনাদিয়া”।
এই দ্বীপে অাপনি সুন্দরবন, নিঝুম দ্বীপ, সেন্টমার্টিন সবগুলোর ফিল একসাথে পাবেন।ঘটিভাঙা চ্যানেল হয়ে দ্বীপে যাওয়ার সময় নদীর দু’পাশের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট দেখলে মনে হবে অাপনি সুন্দরবনে অাছেন।বীচের পাশে চরে হাঁটলে মরুভূমির মতো মনে হবে।যতদূর দৃষ্টি যায়,কোথাও কেউ নেই। রয়েছে অাকর্ষণীয় বালির পাহাড়।সাগরের গর্জন বাদে সুনসান দ্বীপটা একদম নীরব।প্যারাবন, কেয়া-নিশিন্দার ঝোপ ছাড়াও দ্বীপে রয়েছে লাল কাঁকড়া।সোনাদিয়া দ্বীপ যেন ক্যানভাসে আঁকা। ম্যানগ্রোভ ও উপকূলীয় বনের সমন্বয়ে গঠিত এই দ্বীপটি না দেখে বিশ্বাস করা সম্ভব নয়।সেনাদিয়া কক্সবাজারের খুব কাছে অবস্থিত হলেও সেন্টমার্টিন দ্বীপের মতো এখানে তেমন জনবসতি এখনো গড়ে উঠেনি।এই দ্বীপটির আয়তন প্রায় ৯ বর্গ কিমি.।দ্বীপের মোট জনবসতি প্রায় ২০০০ জন।পশ্চিম পাড়া অার পূর্ব পাড়ায় যারা থাকে সবাই একই জনগোষ্ঠীর।যান্ত্রিকতাকে ছুটিতে পাঠিয়ে যারা নিজেদের অাবিষ্কার করতে চান, তাদের উচিত দ্বীপের বিশালতায় নিজেকে বিলিয়ে দেয়া।জীবনে একবার হলেও ঘুরে অাসুন দ্বীপটি।

কিভাবে যাবেনঃ
যেকোনো স্থান থেকে প্রথমে অাপনাকে কক্সবাজার অাসতে হবে।তারপর কক্সবাজারের ৬ নং ঘাট এ আসতে হবে। ওখানে মহেশখালী যাওয়ার জন্যে স্পীড বোট পাবেন, ভাড়া প্রতিজন ৭৫ টাকা।
(বাইরোডে চকরিয়া হয়ে মহেশখালী যাওয়া যায়,সেক্ষেত্রে অন্যরকম সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন)।
মহেশখালী ঘাটে নেমে রিক্সা নিয়ে চলে আসবেন ঘটিভাঙ্গায়।মহেশখালী থেকে ঘটিভাঙার দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। ৫-৬জন হলে একটা অটো নিয়ে যেতে পারেন ঘটিভাঙ্গা, ভাড়া ২০০-২৫০টাকা।
সেখান থেকে আবার ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে সোনাদ্বিয়া দ্বীপে যেতে হয়। ঘটিভাঙা নেমে নৌকায় সোনাদিয়া চ্যানেল পার হলেই সোনাদিয়া।প্রতিদিন জোয়ারের সময় সোনাদিয়া পশ্চিম পাড়া থেকে ঘটিভাঙা পর্যন্ত মাত্র একবার একটি ট্রলার ছেড়ে আসে। এই ট্রলারটিই কিছুক্ষণের মধ্যে যাত্রীদের তুলে নিয়ে আবার ফিরতি যাত্রা করে। ভাড়া প্রতিজন ৩০টাকা ।বোট ছাড়ার সময় জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভর করে, সাধারণত সকাল ১১-১ টার দিকে ছাড়ে । ৪৫-৫০ মিনিট লাগে সেনাদিয়া পৌঁছাতে। অামাদের প্রথম দিন নৌকা মিস হওয়াতে এক্সট্রা একদিন মহেশখালি থাকতে হইছিল।পুরোদ্বীপ ঘুরার জন্য দুই দিন যথেষ্ট। একদিনে তেমন ঘুরা যায় না। ।আমাদের প্লান ছিল একদিন থাকব, পরে আরো একদিন থেকে অাসছি।

থাকা-খাওয়াঃ
সোনাদিয়া দ্বীপে থাকার জন্য কোনো আবাসিক হোটেল নাই। খাওয়ারও জন্য ও কোনো হোটেল নাই। স্থানীয় লোকজনকে টাকা দিলে তারা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়।আর নিজেরা রান্না করতে চাইলে মহেশখালি থেকে বাজার করে নিয়ে যেতে হবে।

সোনাদিয়া দ্বীপে দুইটি পাড়া আছে। পূর্বপাড়া ও পশ্চিমপাড়া। ঘোরাঘুরি ও ক্যাম্পিং করার জন্য পশ্চিমপাড়া বেস্ট।
বি:দ্র: সোনাদিয়ায় বিদ্যুৎ ও চলাচলের জন্য কোন যানবাহন নাই।পুরো দ্বীপ আপনাকে পায়ে হেঁটে দেখতে হবে।

ঘুরতে গিয়ে যেখানে সেখানে পানির বোতল, পলিথিন ফেলবেন না।

হেপি ট্রাভেলিং