মিরসরাই সীতাকুন্ড অঞ্চলকে বলা হয় বাংলাদেশের ঝর্নার স্বর্গ। এই রুটে কেবল ট্রেইলই আছে ১০টি। যে ট্রেইলেই যাবেন সহজে বলে দিলাম কি কি আছে এবং যাওয়ার পথের রুট।
খইয়াছড়া ট্রেইল – মিরসরাই সীতাকুন্ড রুটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রেইল এটি। এখানে রয়েছে ৮ স্টেপ বিশিষ্ট ঝর্ণা আরো উপরে গেলে ডাবল ফলস। খৈয়াছড়ার ঝর্ণার সবগুলো স্টেপ ছাড়িয়ে আরো অনেকটুকু গেলে শেষ সীমা “আমতলী কুম” , সেখান থেকে হাতের ডানপাশে (দক্ষিণ) একটি চিকন ঝিরি। সেই পাথুরে সংকীর্ণ ঝিরিপথে একটু এগুলে পাবেন ৩ স্টেপ বিশিষ্ট “শিমুলতলী ঝর্ণা”।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে মিরসরাইয়ের আগে বড় তাকিয়া বাজারে। এখান থেকে খইয়াছড়া স্কুলের পাশ থেকে সোজা পূর্ব দিকে চলে যাবেন।
নাপিত্তাছড়া ট্রেইল- মিরসরাই রুটের অন্যতম সুন্দর একটি ট্রেইল নাপিত্তাছড়া ট্রেইল। নাপিত্তাছড়া, বাঘবিয়ানী ও বান্দরকুম ও কুপিকাটাকুম নামে চারটি ঝর্ণা এই ট্রেইলে। ঢাকা থেকে নামবেন মিরসরাইয়ের পর নয়াদুয়ারী বাজারে।
বোয়াইল্যা বাউশ্যা ট্রেইল- এই ট্রেইলটি হলো মিরসরাই সীতাকুন্ড অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর ট্রেইল। এই
ট্রেইলে আছে বোয়াইল্যা বাউশ্যা অমরমানিক্য ঝর্ণা। এই রুটে মোট তিনটি ঝর্ণা। এছাড়া আছে ন হাইত্যে কুম, এবং উঠান ঢাল। এই ট্রেইলটা এককথায় অপূর্ব এবং অতুলনীয়।
যেভাবে যাবেন – ঢাকা থেকে নামবেন মিরসরাই বাজারে। মিরসরাই কলেজ রোড থেকে ব্র্যাক পোল্ট্রি ফিড পর্যন্ত যাওয়ার সিএনজি পাবেন। ওখানে নেমে পূর্বদিকে হাঁটা ধরবেন।
হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল- এই ট্রেইলটা মিরসরাই রুটের অন্যতম সুন্দর একটি ট্রেইল। এই ট্রেইলে পাবেন হরিণমারা, হাঁটুভাঙ্গা এবং সর্পপ্রপাত ঝর্ণা। এছাড়াও সর্পপ্রপাতের পাশে বাওয়াছড়ার মুখ। এই রুটে ঢুকতেই পাবেন অপূর্ব নীলাম্বর লেক।
যেভাবে যাবেন- যেভাবে যাবেন – ঢাকা অথবা চট্টগ্রামী যেকোনো বাসে সীতাকুণ্ডের আগে ছোট কমলদহ বাজার। বাজারের পরের রাস্তা আর বাইপাস যেখানে মিলেছে সেখানে নামবেন। রাস্তার পূর্ব দিকে ঢুকবেন। বাকিটা রাস্তা ধরা গেলে আর ছড়ার পথ ধরে এগিয়ে যাবেন।
সোনাইছড়ি ট্রেইল – এই ট্রেইলটি বাকি ট্রেইলগুলোর তুলনায় অপরিচিত এবং দুর্গম। তবে এককথায় অপার্থিব। বিশাল বিশাল পাথর আর গিরিখাদের সমন্বয়ে এই ট্রেইল। আছে গভীর বাদুইজ্যা কুম। একপাশে পাহাড়ের খাঁজ আর নিচ দিয়ে চলার পথ। অনেক জায়গায় সূর্যের আলোতেও ছায়া পড়ে।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে মিরসরাইয়ের পরে নামবেন হাদী ফকিরহাট বাজার। তারপর রাস্তার পূর্ব দিকে হাঁটা ধরবেন।
বাড়বকুন্ড ট্রেইলে- এই ট্রেইলে পাবেন বাংলাদেশের একমাত্র গরম পানির ঝর্ণা। কালভৈরবী মন্দির ও অনিন্দ্য সুন্দর পাহাড়ী ঝিরি পথ এবং বেশ কয়েকটি ছোট ক্যাসকেড ও কুম।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে নামবেন বাড়বকুন্ড বাজারে। সীতাকুন্ডের পরই বাড়বকুন্ড বাজার। বাড়ব কুন্ড বাজার থেকে ৪০ -৪৫ মিনিটের হাঁটা পথ প্রাচীন কালভৈরবী মন্দিরে। ওখান থেকে হেঁটে ঝিরিপথ ধরবেন।
ঝরঝরি ট্রেইল- সীতাকুন্ড ও মিরসরাই অঞ্চলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুন্দর ট্রেইল এটি। এটি মিরসরাই সীতাকুন্ড অঞ্চলের সবচেয়ে লম্বা ট্রেইল। তবে এটি অপরিচিত ট্রেইল। অপূর্ব সব ঝর্ণা ক্যাসকেড এবং ঝিরিপথের সমন্বয়ে এই ট্রেইল।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে নামবেন সীতাকুন্ডের পন্থিছিলা বাজারে। ওখান থেকে হেঁটে পূর্ব দিকের রাস্তা ধরে আধা ঘন্টা হেঁটে ঝিরিপথ ধরবেন।
কমলদহ ট্রেইল – এই ট্রেইলটা এককথায় অসাধারণ। এই ট্রেইলে পাবেন বড় কমলদহ ঝর্ণা সহ মোট চারটি ঝর্ণা। এই ট্রেইলের ঝর্ণাই বড়। বর্ষায় গেলে অপার্থিব সৌন্দর্য দেখতে পাবেন তবে এটি বিপজ্জনক বেশ।
যেভাবে যাবেন – ঢাকা থেকে সীতাকুন্ডের বড় দারোগারহাট নামবেন। এখান থেকে একটু হেঁটে পূর্ব পাশের রাস্তা ধরে ঝিরিপথ ধরবেন।
.সুপ্তধারা সহস্রধারা ট্রেইল – সীতাকুন্ড রুটের সবচেয়ে সহজ ট্রেইল এটি তবে সুন্দর। এখানে পাবেন সুপ্তধারা এবং সহস্রধারা ঝর্ণা সহ কয়েকটি কুম ও ক্যাসকেড পাবেন।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে সীতাকুন্ড ইকোপার্কের রাস্তার মাথা থেকে ইকোপার্কে ঢুকলেই দেখিয়ে দিবে।
.সহস্রধারা মূল ট্রেইল- এটিও আগের ট্রেইলের মতো সহজ তবে আগের ট্রেইল থেকে সুন্দর। এই ট্রেইলে পাবেন প্রাচীন এক মন্দির, সহস্রধারা মূল ঝর্ণা, সহস্রধারা লেক এবং বুদবুদকুন্ড।
.যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে সীতাকুন্ড বাজারে নামবেন। এখান থেকে ছোট দারোগাহাটের লোকাল সিএনজি পাবেন।
বি:দ্র:- প্রকৃতি আমাদের সম্পদ। দয়া করে প্রকৃতিতে যত্রতত্র অপচনশীল ময়লা ফেলবেন না। আপনি যেমন সৌন্দর্য উপভোগ করছেন, আপনার পরবর্তী প্রজন্ম যেন অধিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।
You must be logged in to post a comment.