১২ দিন বালি ভ্রমন

দুই বন্ধু মিলে ঠিক করি বালি যাব, যেই বলা সেই কাজ, জানুয়ারির ২ তারিখ টিকিট কেটে ফেললাম কাছাকাছি দিনে সবচে কম যেদিন। পারলে আমরা সেদিনি চলে যাই । ৯ তারিখ পেলাম ৩০,১০০ টাকা মালিন্দ এয়ারে । ফ্লাইট এর ট্রানযিট ৩ ঘন্টা যাবার সময় আসার সময় ৪ ঘন্টা । ট্রানযিট বেশি সহ আর একটা ফ্লাইট ছিল ওইটা সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পরযন্ত ট্রানযিট, টাকা বাচত ১৫০০ টাকার মত । 
বালি যেতে ফেরত আসার টিকিট, হোটেল বুকিং এবং ডলার এন্ড্রস্মেন্ট থাকা লাগে । আমরা ২০০ ডলার এন্ডরস করি এক এক জন।

হোটেল বুকিং করি ইন্দপিওরজয় হাউস নামের একটা হোসটেল, সিট ৬২৫ টাকা প্রতি রাত। হোসটেল এর পুল ছিল রেটিং ভাল ছিল দেখে এইটা নেই আমরা। আর প্রতি রাতে লাইভ মিউযিক আর ফ্রী ডিনার ছিল । 
বিমান দেশ থেকে সময় মতই ছারে, ট্রানযিট ছিল মালায়সিয়া । এয়ারপোর্ট নেমে দুইজনের খাওাদাওার জন্ন ১৫ ডলার ভাঙ্গিএ নেই । বালি পউছলাম ১০ তারিখ সকাল ১১ ৩০ এ। ইমিগ্রেশনে শুধু জিজ্ঞেস করে কয়জন আসছি , বলে ৩০ দিনের ফ্রী এন্ট্রি দিয়ে দেয়। বিমান সব সময় মত ছিল। এয়ারপোর্টে নেমে সিম কিনি ১৪০,০০০ রুপিয়া, ৯ জিবি “ইন্টারনেট শুধু” পেকেজ নেই। ১০০ ডলের = ১৩ লাখ ২০ হাজার রুপিয়া কম বেশি পাওয়া যায়। কিছু কিছু যায়গায় দেখবেন ১০০ ডলার =১৪ লাখ অফার করছে অইসব যায়গা থেকে দুরে থাকবেন। এ ছারা বালির মানুষ সবাই অনেক ভাল এবং দুই নম্বরি নাই বললেই চলে । টাকার হিসাব টা বুঝতে একটু সময় লাগে। ওদের ১০,০০০ মানে আমাদের ৬২ টাকা। 
এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ার সময় টেক্সি ওয়ালাদের সাথে আলাপ করতে থাকি, ৪৫০,০০০ থেকে ৪০০,০০০ ভারা চাইতে থাকে।

একটু বাইরের দিকে গিয়ে ১০০,০০০ ঠিক করি। ( উবারে ৬০,০০০। কিন্তু এয়ারপোর্ট বা টুরিস্ট স্পট গুলতে উবারে যাওয়া যায় কিন্তু ওইখান থেকে আসা যায় না, অইখানকার সিস্টেম লোকাল টেক্সি ব্যবহার করতে হবে ) 
হোসটেলের কাছের একটা রেস্টুরেন্ট থেকে খাওয়া সারি , ১৫০-২৫০ টাকায় আপনি ভাল খাবার পাবেন। ওইদিন বের হতে হতে বিকাল হয় কাছের একটা দোকান থেকে ৪ ঘন্টার জন্য একটা বাইক ভারা করি ৩০,০০০ দিয়ে , তেল সহ। সারাদিনের জন্য বাইক ভারা ৬০,০০০ থেকে শুরু তেল সহ। ( ১০,০০০ = ৬২ টাকা) ওইদিন কুটা বিচ এর ঘরাঘুরি করে ফেরত আসি।
কুটা বিচে লোকাল দের সাথে আড্ডা দেয়াটাও অনেক উপভজ্ঞ, সবাই ভাল ইংরেজি জানে , ভাল গিটার বাজায় আর সব হিট ইংরেজি গান মুখস্ত !!! আড্ডার মাঝখানে সামনে দিয়ে কোন ইন্ডিয়ান গেলে দেখবেন ওরা হিন্দি গান গেয়ে মজা করে ।

৫ কিলমিটার এর ভেতরে ঘোরাঘুরি করতে আমরা বাইক নিতাম আর দুরের জায়গা গুলয় ঘুরতে উবার ব্যেবহার করতাম। বাংলাদেশ থেকে ওইখানে উবার অনেক সস্তা আর গ্রেব আছে ওইটাও আরও সস্তা। ৪ দিন আমরা বালির বিভিন্ন স্পটে ঘুরি। ৫ম দিন আমরা বালির কাছে একটা দিপ নুসা পেনিদাতে যাই। অইখানে যাওার জন্য আমরা যেখানে থাকতাম কুটা সানসেট রোড থেকে সানুর বিচে যাই, অইখান থেকে বড় স্পীড বোটে নুসা পেনিদা যাই। ১৫০,০০০ রুপিয়া পার পারসন, এই বোটে ৪০ মিনিট সময় লাগে, এ ছারা লোকাল বোটে যাওয়া যায় ৪০,০০০-৬০,০০০ ভারা, ওইটাতে সময় লাগে ২ ঘন্টা। বোট সব নির্দিষ্ট টাইমে ছারে, হোটেল থেকে অথবা নেট থেকে সময় দেখে যাবেন। বালি গেলে নুসা পেনিদা মাস্ট একটা জায়গা।এইখনের সমুদ্রের পানি আমাদের বিছানাকান্দির পানির মত পরিস্কার আর কিযে নীল ! এই যায়গা ২ দিন থাকার মত, সব খানে নেটওয়ার্ক নাই, অফলাইন ম্যাপ নামায় নিলে ভাল ।

এখানকার হোটেল ওই ৬০০- ১২০০ তে ভাল মানের পাওয়া যায়। বাইক অথবা মানুষ বেশি হলে গাড়ি ভাড়া নিয়ে ঘুরতে পারবেন। তবে এইখানে বাইক চালাতে দক্ষ হলেই বাইক নিবেন, রাস্তা বান্দারবান , খাগড়াছড়ি ফেইল । এইখানে কেলেনকিং বিচ , আঙ্গেলস বিলাবং , সারিন ক্লিফ পএন্ট , ব্রকেন বিচের মত সুন্দর যায়গা আছে । আসার সময় আমরা পাশের একটা দিপ নুসা লেম্বগান হয়ে বালি ফেরত আসি। অইখানে একদিনে ঘুরে শেষ করে বিকালের মধ্যে বালি ফেরত যাওয়া যায়। ওহ একদম ভুলে গেছিলাম, রাম্বুতান, ড্রাগন ফলের মত বিদেশি ফল আমাদের দেশে ৭০০-৭৫০ টাকা কেজি ওইখানে ফ্রেশ গাছ থেকে পারা ফল ১২০ টাকা করে কেজি । ইচ্ছা মত খেতে ভুলবেন না ।

ভিডিও বা ছবি এই যায়গার সৌন্দর্য কিছুই আনতে পারেনা। সামনা সামনি, ইন ফ্লেশ ইটস থাউযেন্ড টাইমস বেটার !
টিকেট কাটেন আর চলে যান। টিকেট ভারাটা বাদ দিলে, আমার কাছে কক্স-বাজার থেকে অনেক অনেক সস্তা মনেহইছে। যাবার আগে একটা ট্রাভেল প্লান বানাবেন, কোথায় কোথায় যাবন সেটা। টি ও বি র ডক ফাইল গুলা পরে নিলে আরও অনেক কিছু ক্লিয়ার হবে।

প্রতিদিন ১৫০০-৩০০০ পার পারসন টাকায় আপনি সব খরচ কাভার করতে পারবেন। এইভাবে যতদিন থাকেন। আসলে এর চেয়ে কমেও সম্ভব , কিন্তু এতটুকু আমার কাছে মিনিমাম মনেহইছে ।

বাকি দিন বালিতে ক্লাবিং আর চিল করে কাটায় দেই । আর বিদেশিদের সাথে শুন্দর ভাবে কথা বললে অনেক বন্ধু বানাতে পারবেন। সবাই অনেক ফ্রী আণ্ড ফ্রেন্ডলি । বাঙ্গালি/বাংলাদেশি হিসাবে দেশের মান রাখতে চেষ্টা করবেন সবসময় ।

আমরা পানির বোতল খাবার পেকেটে যেখানে সেখানে না ফেলে ব্যাগে করে ফেরত এনে জায়গা মত ফেলে দিয়ে আসছি ।